- কোভিড-১৯ শব্দটা এখন বৈশ্বিক একটা আতংকের নাম।মোটামুটিভাবে গত তিন-চার মাস থেকেই এই ভাইরাস পুরো পৃথিবীকেই থমকে দিচ্ছে। একদেশ থেকে আরেক দেশে যেভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, এতে করে পুরো পৃথিবীতে একধরনের প্যানিক জনমনে তৈরি হয়েছে। এবং একইসাথে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের এন্টিবডি খুঁজে না পাওয়ায়,প্রাথমিক কিছু গণসচেতনতা আর সাময়িক চিকিৎসা হলেও এর এখনও প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। ফলত, মানুষের জীবনযাত্রার মান যেমন ঝুঁকিতে তেমনি করে পুরো বিশ্বে মৃতের সংখ্যা বেড়েই চলছে। ঠিক এই মুহূর্তে আমাদের এই আসলে কি করা উচিত? কি কি করা উচিত তা নিয়ে অনেকটা ধারণা দেওয়া হলেও আমাদের আসলে সেরকম কোনো উদ্যোগ নেই।সরকারের উদাসীনতা, বঙ্গীয় বুদ্ধিজীবীদের অযৌক্তিক ফাত্রা আলাপ এবং রাজনৈতিক নেতাদের বদমাইশি করোনাকে ঘিরে ভালোই জমে ওঠেছে।
- এই ভাইরাসটা যখন প্রথম চীনে মহামারী আকার ধারণ করেছে তখনই আমাদের রাষ্ট্রীয়ভাবে সর্তক থাকা উচিত ছিলো।কিন্তু আমাদের তখন সে-রকম তৎপরতা দেখা যায়নি।এবং এখনো তাই। এতে করে আসলে কি হতে চলছে তা আমার অনুমানের বাইরে। করোনা মহামারীতে আরো যে সমস্যাগুলো হচ্ছে বা হবে তা হলো মানুষ এখন অন্যান্য রোগীদের নিয়েও বেশ বিপাকে পড়ছে তাদের স্বজনরা ।কারণ অনেক হাসপাতালই করোনা আতংকে বন্ধ হয়ে আছে।এছাড়া করোনা সন্দেহভাজনদের জন্যও আলাদা কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।সরকারের তরফ থেকে ডাক্তারদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ পিপিই সরবরাহের কথ বলা হলেও সেভাবে ডাক্তারদের কাছে তা পৌঁছেনি।এতে ডাক্তারদের জীবনমানও খুব ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের মতো গরীবদেশগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ থাকার দরুণ দিনমজুরদের জীবনযাত্রা আরো করুণ হয়ে ওঠেছে।তারা ঠিকমতো খেতে পারছে না,কারণ তাদের নিত্যপ্রয়োয়োজনীয় সামগ্রী কেনার মতো অর্থ নেই। তো সরকারের কি এইবিষয়গুলো নিয়ে সেকরম কোনো তৎপরতা আছে?এবং যারা ত্রাণ দিচ্ছে তারাও কি খতিয়ে দেখেছেন যে সঠিক মানুষগুলোর কাছে ত্রাণগুলো পৌঁছাচ্ছে কি না?নাকি সেইখানেও পলিটিশিয়ানদের বদমাইশি! যাইহোক কথাগুলো বলার মেইন রীজন হলো আসলে যারা এগিয়ে আসতে চাচ্ছেন তাদেরকেও আমরা সাপোর্ট দিচ্ছি না।
- এই উপমহাদেশীয় মানুষদের আরেকটা অসুবিধা হইলো তাদের মধ্যে ধর্মীয় গোঁড়ামির পরিমাণ বেশী। ফলত যারা করোনা নিয়ে সর্তক করছেন তারাও বেশ বিপাকে আছে।কেউ তাদের কথাগুলো মানছেন না।এবং ধর্মীয় পন্ডিতমূর্খদের বয়ানের ওপর বেস করে এক অলীক দম্ভ নিয়ে মানুষ যেখানে সেখানে অবাধে বিচরণ করছে। কাউকে ঠিকমতো ঘরে বেঁধে রাখা যাচ্ছেনা।আমাদের বঙ্গীয় বুদ্ধিজীবী সমাজের আরো করুণ দশা।তারা যেখানে করোনা প্যানিক থেকে মুক্তির একটা ওপায় বাতলে দিবে যে জায়গায় তারা এখনো পড়ে আছে মুজিববর্ষের উদযাপন নিয়ে।সরকার যে কয়েকদিন আগে নির্বাচন দিলো দেশকে একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে ফেলে রেখে, সেটা নিয়েও তারা বেশ চুপচাপ ছিলো। যদি কোনোমতে আমরা এই করোনা মহামারীর বিপদ থেকে উদ্ধার হইতে পারি তো দেখবেন এই বঙ্গীয় বুদ্ধিজীবী পঙ্গপালেরা তখন গর্ত থেকে বের হয়ে আসবেন,এবং একেকজন কিভাবে গর্তে থেকে নিজেরা সারভাইভ করছেন সেরকম একটা থিসিস নিয়ে আমাদের সামনে হাজির হবেন।
- ”সেইজ সলোনকে একবার জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো, একটা রাষ্ট্রে কীভাবে অন্যায় কমানো যায়।সলোন বলেছিলেন, অন্যায় যাদের প্রতি করা হয়েছে তারা যে ক্রোধ অনুভব করে এতে, সেই ক্রোধ যাদের প্রতি অন্যায়টি করা হয়নি তারাও যদি একইভাবে অনুভব করে তাহলেই রাষ্ট্রে অন্যায় কমানো সম্ভব।” তো ব্যাসিক্যালি রাষ্ট্র মূলত এটাই।যেখানে প্রতিটা নাগরিকের সমস্যাকে যার যার মতো করে না দেখে রাষ্ট্রীয়ভাবে সমাধান করা উচিত। তাছাড়া করোনা তো একটা মহামারী রোগ।তো এইসময় তো আমাদের আসলে সবার কথাই ভাবা উচিত।কিন্তু এই বঙ্গদেশে আমরা যার যার মতো করে বেঁচে যেতে পারলেই বোধহয় খুশি। রাষ্ট্র উচ্ছ্বনে যাক, এনিয়ে কারো মাথাব্যথা নেই।ধনীসমাজেরা অধিকাংশ লোকেরাই আত্মকেন্দ্রিক, তারা তাদের গন্ডি নিয়েই ভাবে।ফলত গরীবার বারবার শোষিত হয়ে যাচ্ছে তো হয়েই যাচ্ছে।এবং সবচে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এখনো আমরা আমোদ ফুর্তিতে আছি। সবাই শরীর জোর দিয়া বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে বদমাইশি চালিয়ে যাচ্ছি,কিন্তু প্রতিবেশীদের কথা ভাবছি না। এতে করে আমাদের আসলে যেকোনো সমস্যাই রাষ্ট্রের জন্য মহামারী আকার ধারণ করতে পারে।কারণ আমরা জাতিগত ভাবে একটু পৈশাচিক, কম্প্রোমাইজের সূত্র আমাদের ভেতরে চর্চা হয় না।ফলত, দিনশেষে আমাদের ঈশ্বর ছাড়া আর কারো কাছে যাওয়ার রাস্তা থাকে না।
সর্বশেষ বলবো,যারা ধর্মীয়ভাবে সমাজকে ভুল দিকে ধাবিত করছেন,পলিটিশিয়ান যারা জনগণকে ভুলভাবে মোটিভ করছেন,বঙ্গীয় বুদ্ধিজীবী কীটগুলো যারা সরকারে পা চাটছেন,তাদের বিরুদ্ধে সরকার যাতে আগে ব্যবস্থা নেয়। এরা করোনার চেয়েও প্রাণঘাতী। করোনার আজহোক কিম্বা কাল একটা প্রতিকার প্রতিষেধক আবিস্কার হবেই।কিন্তু সরকার যদি এদের নিয়ে চুপ থাকেন,তো এই ভাইরাস একদিন এতোটাই শক্তিশালী হয়ে ওঠবে যে সরকারের তখন আর ডানে-বামে যাওয়ার রাস্তা থাকবে না। দারিদ্র এই দেশগুলোতে আগে মনু্ষ্য ভাইরাসগুলো প্রতিহিত করা একমাত্র উপায়, এরপর ঈশ্বরের বিশ্বাস ও অন্যবাকিসব ব্যবস্থা।
~লেখক : আহমেদ সাব্বির
IT Protindin এর সাথেই থাকুন
9 comments
ধন্যবাদ ভাই
😍
আমার কাছে পুরো সরকার ব্যবস্থাটাকেই ভাইরাস মনে হয় বাকীসব পরে।
খারাপ বলেন নি
ভালো লাগলো।
ধন্যবাদ
[…] সহ বৈশিষ্ট্য ও সুবিধাসমূহ! ~করোনা ভাইরাস, বঙ্গীয় বুদ্ধিজীবী ও সরক… কোনো প্রকার এপস ছাড়াই ফেসবুকের […]
আমার কেনো জানিনা মনে হচ্ছে,,,,সরকারের সাথে সাথে আমরাও উদাসিন হয়ে যাচ্ছি,,,প্রোপার কোনো স্টেপ আমরাও নেই নি,,নাহলে আন্দারমহল এতো সুযোগ পেতো না।
Good answers in return of this issue with firm arguments and explaining everything
concerning that.