করোনা ভাইরাস

করোনা ভাইরাস, অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ততা ও কিছু প্রশ্ন~

by admin
236 views

করোনা ভাইরাস, অর্থনৈতিক ক্ষতিগ্রস্ততা ও কিছু প্রশ্ন~

করোনা ভাইরাস,বর্তামনে বিশ্বব্যাপী এক আতংকের নাম। শুধু যে অসুস্থতার সাথে ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই তা কিন্তু না।ঠিক একইসাথে অর্থনৈতিকভাবেও বিশাল ক্ষতিগ্রস্থের ছাপ পুরো বিশ্বে।এরইমধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন আলোড়ন তৈরী করেছে ।যেমনঃ

*ভাইরাসের এর উৎপত্তি ওচায়নার উহানের ওয়েট মার্কেটে কিনা নাকি বায়োওয়েপন হিসাবে ল্যাবে তৈরি।
*চীনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার যৌক্তিকতা
*চীন,কোরিয়ার মার্কিন সেনাদের উপর সন্দেহ কতটা যৌক্তিক?
*চীনের বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সম্ভাবনা। -ইত্যাদি

এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যানুযায়ী সার্স কোভ-২ করোনা ভাইরাস চীনের উহানের ওয়েট মার্কেট গুলোর মাধ্যমেই মানুষে ছড়িয়ে পরে।

তবে আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষণ ও অভিমত অনুসারে, ল্যাবে তৈরির বিষয় টা ভিত্তি প্রমাণহীন গুজব। আর তাছাড়া তাহলে চায়নার এতো মানুষের মৃত্যু,১০দিনে হাসপাতাল তৈরি আবার তার ধ্বস এসবও হতোনা।
ICJ চীনের বিরুদ্ধে UNHCR মামলা করেছে।যা ইচ্ছাকৃত বা অবৈধ কাজের মাধ্যমে পৃথিবীর মানুষের ক্ষতির ক্ষতিপূরণ দাবী করে। Click Here

এই মামলার যৌক্তিকতা অবশ্যই কিছু আছে।যদিও এটি উহানেই মানুষের মধ্যে এসেছে।কিন্তু বেশ কিছু দোষ তাদের রয়েছে। যেমন তথ্য গোপন। ডিসেম্বরের প্রথমে ভাইরাসটি দ্বারা মানুষ আক্রান্ত হতে শুরু করে।অথচ আমরা ফ্রেব্রুয়ারীতে এসে মোটামুটি স্বচ্ছ ধারনা পাই।তার আগে ডিসেম্বরে বিভিন্ন ডাক্তারগণ বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)সবাইকে জানাতে চাইলেও চায়না সরকার তা দেয়নি।হতে পারে এর পেছনে তাদের কোনো উদ্দেশ্য ছিলো না।ভেবেছিল বোধহয় একাই সামলে নিতে পারবে।কিন্তু যেহেতু তা পারেনি।উল্টো তাদের এই ভুলের জন্য বাধাহীন ভানে সারাবিশ্বে ছড়িয়েছে এরও দায় তাদের নিতেই হবে।এরপর ৩১শে ডিসেম্বর WH0 জানায় এতা নাকি ম্যান টু ম্যান ছড়ায় না।এটা মানুষের মধ্যে মানুষ থেকে যায় না,সংক্রামক নয়।সারাবিশ্বে WHO এর মাধ্যমে ছড়ানো এসব ভুল তথ্য ব্যাপক ভাবে বিশ্বের ক্ষতি করে সেটা বলাই বাহুল্য।এমনকি এয়ারপোর্ট বন্ধের কথা বললেও চীন সরকার জানিয়ে দেয় এর কোনো দরকার নাই। Click Here

তারা তাদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এই ভাবে পুরো বিশ্বের মানুষ কে বিপদে ফেলেছে।তারা যে শুধু তখন অসচেতন ছিল এখন যে সচেতন হয়েছে তাও নয়।তারা তাদের ওয়েট মার্কেট গুলোও আবার খুলে দিয়েছে।আবার যে, কোনো নতুন ভাইরাসের আমদানি হবে না তার নিশ্চিত সম্ভাবনা কে দিবে?তারপর এখন পর্যন্ত তারা জিরো পেশেন্ট কে তুলে দেয়নি।অথচ অন্য যে কোনো মহামারী তে WHO জিরো পেশেন্ট কে ট্রেস করে।সুতরাং এসব অপরাধের দায় হিসেবে মামলা যৌক্তিক।

এরমধ্যে ই জি ও পলিটিকাল কারণে পরস্পরের উপর অযৌক্তিক ও ভিত্তিহীন দোষারোপ শুরু হয়ে গিয়েছে।আমেরিকা,ইন্ডিয়া যেমন ইনিয়ে বিনিয়ে মানুষকে বোঝাতে চাচ্ছে এটা চায়নার ল্যাবে তৈরি। অন্যদিকে আবার চায়না কোরিয়ানরাও ঠিক ভাবেই মানুষের মাঝে প্রচার করছে এটা আমেরিকান সেনাবাহিনীরা ট্রেনিং এ এসে চায়নায় ছড়িয়ে দিয়ে গেছে।বাট উভয় পক্ষ’ই যুক্তি প্রমাণহীন দোষারোপ করে তাদের রাজনৈতিক শত্রুতা জারি রাখতে চাচ্ছে, যা একইসাথে দুঃখজনক ও উদ্বেগের ব্যাপার পৃথিবীর জন্য।

এবার আসি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন, চায়না কতোটা লাভবান?
২য় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকেই আমেরিকা বিশ্ব রাজনীতিতে লিডিং পর্যায়ে আছে যার পেছনে ‘অস্ত্রব্যবসা’ গুরুত্ব রেখেছে।অনেকেই বলছে চায়না এই করোনায় সে জায়গা নিয়ে নিবে।এক্ষেত্রে চায়নার অর্থনৈতিক লাভজনক জায়গা হলো কিট,পিপিই সাপ্লাই,ভ্যাক্সিন বাজারে ছাড়বে সম্ভবত চায়নাই আগে।আরেক হলো শেয়ার ক্রয়।ব্যক্তিগত ভাবে আমার মতামত হলো ঔষধ ও কিট বিক্রি করে বিশ্বের মার্কেট নেওয়া সম্ভব না।লক্ষকোটি ঔষধের দাম আমেরিকা ৫টা বিএমডাব্লিউ বা ৬ মাস আইফোন বিক্রি করেই উঠায়ে ফেলবে।যাইহোক আমার অভিমত আর সেদিকে এগুচ্ছে না।

বিশ্বসেরা অর্থনীতিবিদদের গবেষণায়ও কিন্তু একটা বিষয় খুব স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠছে যে হচ্ছে চায়না অর্থনৈতিক লাভের চেয়ে অর্থনৈতিক সংকটে পড়ারই সম্ভাবনা প্রবল বেশী। Click Here

সর্বশেষ, মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট প্রশ্নহলো মৃত্যুহার।যেখানে মাস্ক পরিধান করা,দূরত্ব বজায় রেখে চলা,স্পর্শ না করা এসব ইনফো আমাদের হাতে থাকার পরেও সারাবিশ্ব করোনা মোকাবেলায় হিমশিম খাচ্ছে সেখানে চায়নার মৃত্যুহার এতো কম কেন?উত্তর কোরিয়াতে ভাইরাসের প্রবেশই সম্ভবপর হলো না।অন্যদিকে ইউরোপ, আমেরিকাতে মৃত্যুর হার দিনদিন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।আমাদের রাষ্টব্যস্থার দূর্বল কাঠামো,দারিদ্রতা,চিকিৎসা ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকা ,মুর্খতা ও অসচেতনা দায় হলেও আমেরিকাও কি তাই?সেখানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি গ্রস্থ কেন?ইউরোপ ও কি অসচেতন?
উত্তর হলো হ্যাঁ।আমেরিকার অসচেতনার নিউজ আমরা দেখেছি তারা কিভাবে রাস্তায় নেমে আন্দোলন করলো।অস্ত্র নিয়ে রাস্তায় নেমে গিয়েছিলো ঘরে থাকবেনা।আর অপরদিকে রাষ্ট্রের প্রতি চীনের মানুষ কি পরিমাণ অনুগত তার বেশ পরিষ্কার ধারণা আমরা দেখে আসছি এই মহামারীকালীন সময়ে।আর এখানে একটা বিষয় ভুল গেলে হবে না যে,ডে বাই ডে করোনা মিউটেশন করে নিজেকে আরো শক্তিশালী বানাচ্ছে।চায়না যেহেতু প্রথমেই সচেতন হয়ে গিয়েছিল।তাই শক্তিশালী ভাইরাস আক্রমণ করার সুযোগ কম পাচ্ছে।আরেকটা বিষয় ও মাথায় নোটেড দরকার যে ভুটানেও কিন্তু করোনা নিয়ন্ত্রণে।

লেখিকা : Lamia Islam

Related Posts

Leave a Comment